নীল কষ্টের মমি

Posted by

শুরুটা হয়েছিলো সাধারণ একটা চেক আপ থেকে। গলায় তখন অনেক কষ্ট। সারাদিন ডিউটি আর এক ঘেয়েমি , যারফলে জীবনটা কেমন যেন মিনমিনবিনবিন। নিজের মনের ঠেলাঠেলিতে পিজির সাধারণ রোগী দেখার যায়গায় যেয়ে উপস্থিত হয়ে গেলাম। যথারীতি টিকেট কেটে যে রুমে ঢুকলাম , সেখানটায় একজন জেনারেল ফিজিসিয়ান রোগী দেখছেন। শ্যামলা গড়ন, ছোট্ট তিল ঠোটটার মাঝখানে , চুলগুলো এলোমেলো একজন লেডি ডাক্তার বসে আছে । বয়স বুঝা বা আন্দাজ করার চেষ্টা না করে বসে পড়লাম তার সামনে। সাধারণ ব্যবহার করে কোন প্রশ্ন না করে না তাকিয়ে কি যেন খচখচ লিখে বলল লবন পানি আর হাল্কা গরম পানি দিয়ে গলাটা যেন গড়গড় করি। আর একটা ভেষজ সিরাপ দিয়ে এই তাকালেন আমার দিকে। অতি সাধারণ মানের চেহারা। মুখের কিছু অংশে ঘাম জমে থাকায় যায়গাগুলো অতি কালো হয়ে আছে। আমি ইচ্ছে না করেও বলে বসলাম আপনার ফোন নাম্বারটা দিয়ে দেবেন। এবারও তাই চুপচাপ খচখচ করে নিজের নামটা লিখে দিয়ে ফোন নাম্বারটা ছোট্ট কাগজটায় লিখে দিয়ে দায় সারলেন । আমি চলে এলাম। 

এরই মধ্যে অফিস , নাওয়া খাওয়া নেই । ঔষুধ কিনি নাই আর গড়গড় করে উঠা হয় নাই। একদিন বেশ রাতে কি মনে হলো হাত নিশপিশ করতে করতে ফোন করে বসলাম সেই লেডি ডাক্তারকে। দুইবার রিংটোন বাজার পর খসখস গলায় হ্যালো বলল। কেন জানি নিজের পরিচয়টা দিয়ে বেশ আগ্রহ নিয়ে কথাগুলো শেষ করলাম মিনিটের চারভাগের একভাগের মধ্যে। লিজা কিছু বুঝেছেন কিনা জানি না, বলেই বসলাম দেখা করব আপনার সাথে। দেখা করা যাবে। কোন ভাবান্তর দেখা গেল না। আসেন কালকে। কখন , যখন থাকি। দেখা করলাম । ইজি কথা বিজি ভাব নিয়ে সময় শেষ হলো। 

লিজা একজন পেশায় ডাক্তার । একা থাকেন । থাকেন একটা ছোট্ট বাসায়। বিয়ে থা করেননি। ইচ্ছেও নেই। কথাগুলো তিনি বললেন নিজের মতো করে। লিজাকে দেখলাম নিজের মতো করে। হালকা ফিগার । বাড়ন্ত সৌন্দর্য। খামচে ধরে আসে বুকটাকে। ভালো লাগলো। দুইবার দেখা হয়েছে। লিজার বাসায় একদিন হাজির হয়ে গেলাম। অনেকগুলো গোলাপ নিয়ে। খেচুরি রান্না করে খাওয়ালা। চুপচাপ বসে থাকলাম। গান শুনলাম। তারপর সাহস দেখিয়ে ওর হাতটা ধরতেই লিজা কেমন যেন সাহসী হয়ে উঠল । ওলটপালট হয়ে গেলো দুইজনে দুটো শরীর। নিজেই নিজের মতো করে আমার কাছ থেকে সব আদায় করে নিলো। বুঝলাম লিজা আমারই মতো। লিজার বাসায় শাওয়ার নেয়ার পর আবদার করে বললাম গরম চা খাবো। বানিয়ে নিয়ে এলো। নিজেকে তখনও সে এলোমেলো করে ধরে রাখালো। কাছে এলে আলতো করে বুকের উপর একটা চুমু একে দিলাম। বেশ খুশি হয়ে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, তুমিতো বেশ পারো। আমার খুব ইচ্ছে ছিলো নিজেকে নিয়ে খেলতে। সবাই পানসে । তোমাকে আমার ভালো লেগেছে।

লিজার কখার অর্থ  যে কোন পুরুষ মানুষ বুঝবে। আর সেই পুরুষ মানুষগুলো নিজেদের যতই স্মার্ট আর হনুতনু হোক না কেন । লিজার খুশি,  বিশেষ একটা কিছু। সেটা ভালোবাসা না ওটা একটা আদিম নেশার খেলা। নীল কষ্টের , না পাওয়া মমির শরীর।

লেখক পরিচিতি: রেজা নওফল হায়দার/ সাংবাদিক, ছোট গল্প লেখক 

6 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*