অনুকরনীয়: পাকিস্তানের এক শিক্ষিকা আলো ছড়িয়েছেন সমাজে

Posted by

শিক্ষা প্রতিদিন: মাত্র ১৩ বছর বয়সে এলাকার গরিব বাচ্চাদের জড়ো করে তাদের পড়াতে শুরু করেন রিফত। পাশাপাশি চালিয়ে যেতে থাকেন নিজের পড়াশোনা। ছোট্ট মেয়ের মহৎ প্রচেষ্টা দেখে তাঁর পরিবারও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। বাচ্চাদের পড়াশোনা শেখানোর জন্য কোনও টাকা নেন না রিফত আরিফ। তেমন বিত্তশালী পরিবারেরও সদস্য নন তিনি। তাঁর সময় কাটে গরিব এবং দুঃস্থ বাচ্চাদের পড়াশোনা শিখিয়ে। আয়ের অন্য কোনও উপায়ও নেই। অথচ রিফতের সম্পত্তির পরিমাণ কোটি কোটি টাকা! রিফত পাকিস্তানের এক জন শিক্ষিকা। তাঁর জন্ম গুজরানওয়ালায়। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহ ছিল মধ্যবিত্ত পরিবারের এই কন্যার। ছোট থেকেই রিফত বুঝে গিয়েছিলেন, শুধু নিজে পড়াশোনা করলেই হবে না। সমাজের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে হলে আরও মানুষকে শিক্ষিত করতে হবে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে এলাকার গরিব বাচ্চাদের জড়ো করে তাঁদের পড়াতে শুরু করেন রিফত। পাশাপাশি, চালিয়ে যেতে থাকেন নিজের পড়াশোনা। ছোট্ট মেয়ের মহৎ প্রচেষ্টা দেখে তাঁর পরিবারও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। স্কুলের খরচ চালানোর জন্য খুব কম বয়সে একটি চাকরিও জুটিয়ে ফেলেন রিফত। আট ঘণ্টা চাকরি করে যে বেতন পেতেন, তা ঢেলে দিতেন স্কুলে। রোজ কর্মক্ষেত্র থেকে বাড়ি ফিরে চার ঘণ্টা করে বাচ্চাদের পড়াতে বসতেন রিফত। এর পর রাতে আবার নিজেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতেন। বহু বছরের চেষ্টায় ধীরে ধীরে অল্প অল্প করে তহবিল সংগ্রহ করে একটা স্কুল খুলে ফেলেন রিফত। উদ্দেশ্য ছিল, আরও গরিব শিশুর কাছে বিনামূল্যে শিক্ষা পৌঁছে দেওয়া। ২৬ বছরের প্রচেষ্টার পর রিফতের স্কুলে বর্তমানে প্রায় ২০০ জন গরিব পরিবারের সন্তান এবং পথশিশু পড়াশোনা করে। সারা বিশ্বের কাছে রিফত পরিচিত সিস্টার জেফ নামেও। ৪০ বছর বয়সি শিক্ষিকাকে শ্রদ্ধা করেন গুজরানওয়ালা এলাকার বাসিন্দারা। প্যারিসে গিয়ে ‘গ্লোবাল টিচার প্রাইজ়’ নিয়েছেন রিফত। পুরস্কার নিতে মঞ্চে উঠার পর রিফত বলেন, ‘‘আমি বলতে চাই যে, শিক্ষকতা শুধু কোনও চাকরি নয়। এটা এমন একটা পেশা, যা অনুপ্রেরণা জোগায়, প্রশিক্ষণ দেয় এবং পরবর্তী প্রজন্মকে শক্তিশালী করে তোলে।’’ ‘গ্লোবাল টিচার প্রাইজ়’-এর পুরস্কারমূল্য ১০ লক্ষ ডলার। অর্থাৎ, বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় সাড়ে দশ কোটি টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*